আবু সায়েম মোহাম্মদ সা’- আদাত উল করীম: ২৩ জুন রবিবার-টাঙ্গাইলে কনস্টেবল পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে টাকা লেনদেনের সময় হাতেনাতে পুলিশের এক এসআই ও এক সাংবাদিকের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- জামালপুর সদর কোর্টের এসআই মোহাম্মদ আলী ও শাহানাতুল আরেফিন সুমি (৩৫)। এসআই মোহাম্মদ আলী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের মৃত ইনছান আলীর ছেলে। সুমি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক অন্য দিগন্ত পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক মো. খায়রুল বাশারের স্ত্রী। তার বাড়ি জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার টুংরাপাড়া গ্রামে। শনিবার তিনজনের নামে প্রচলিত আইনে মামলা হওয়ার পর আটক দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। শুক্রবার রাত ৮টায় টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়। স্ত্রীর গ্রেপ্তারের খবর শুনে মামলার অপর আসামি খায়রুল বাশার পালিয়ে গেছেন। শনিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, শেরপুরের নামপাড়া গ্রামের মো. ওয়াজেদ আলীর ভাতিজা টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বাড্ডা গ্রামের মো. কবির মিয়া (১৯) এই পদে চাকরি প্রার্থী। তাকে পুলিশে চাকরি দেওয়ার জন্য এসআই মোহাম্মদ আলী সাংবাদিক খায়রুল বাশারের সঙ্গে ওয়াজেদ আলীকে পরিচয় করিয়ে দেন। তাদের মধ্যে ১০ লাখ টাকায় এসআইয়ের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার চুক্তি হয়। গতকাল খায়রুল বাশার, তার স্ত্রী সুমি এবং এসআই মোহাম্মদ আলী একটি মাইক্রোবাসে করে জামালপুর থেকে টাঙ্গাইল আসেন। আসার পথে ওই মাইক্রোবাসের মধ্যেই সুমির কাছে ওয়াজেদ আলী ১০ লাখ টাকা হস্তান্তর করেন। সন্ধ্যার পর তারা টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আসেন। সেখানে আসার পর ওয়াজেদ আলীকে এসপি ব্যস্ত আছেন বলে জানান সুমি। তাই এখন দেখা হবে না। তাকে (ওয়াজেদ) নিচতলায় অপেক্ষা করতে বলেন। এ সুযোগে সুমি বাইরে গিয়ে তার স্বামী খায়রুল বাশারকে ব্যাগ থেকে টাকাগুলো বের করে দেন। টাকা নিয়ে খায়রুল বাশার চলে যান। খায়রুল চলে যাওয়ার কারণে এসপির কার্যালয়ের বাইরে সুমি ও এসআই মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে ওয়াজেদ আলী বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ সময় এসপির কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত ডিবির সদস্যরা তাদের আটক করেন। আটকের পর সুমির ব্যাগ থেকে এক লাখ ৯৫ হাজার টাকা, তার স্বামীর পত্রিকার পরিচয়পত্র এবং তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সুমি জানান, তার স্বামী আট লাখ পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে গেছেন। এই টাকা উদ্ধার এবং খায়রুল বাশারকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান এসপি সঞ্জিত কুমার রায়। আজ সকালে এসআই মোহাম্মদ আলী, সাংবাদিক খায়রুল বাশার ও তার স্ত্রীকে আসামি করে ওয়াজেদ আলী টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। আজ আদালত গ্রেপ্তার দুই আসামির জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠান।