নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পাঁচ দিন চেষ্টা করেও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামানের দেখা পাননি আছিয়া খাতুন নামের ষাটোর্ধ্ব এক ভূক্তভোগী মহিলা। দেবরের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধে ওসির সহযোগিতা চাইতে এসে তিনি এ ভোগান্তির শিকার হয়েছে। ভূক্তভোগী আছিয়া জানান, একে একে পাঁচ দিন থানার বাইরে বসে থেকে ফেরত যেতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। থানার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কনস্টেবলরা তাকে ভেতরে যেতে বাঁধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ তার। সবশেষ শনিবার সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত থানায় অপেক্ষমান ঘরে ওসির দেখার অপেক্ষা করে ব্যর্থ হয়ে সোনারগাঁ প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের দারস্থ হয়েছেন তিনি। আছিয়া খাতুন জানান, কাঁচপুরের কুতুবপুর গ্রামের মিয়া চাঁন সরদারের ছেলে নূর হোসেনের সাথে ৮ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধে চলছে। এ বিরোধের জের ধরে ২০মে তাকে পিটিয়ে একটি হাত ভেঙ্গে দেয় তারা। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামানকে। ওসি মনিরুজ্জামান এ মামলার তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। আমিনুল ইসলাম দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে আছিয়া খাতুনের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন ও ডাক্তারী প্রতিবেদনের জন্য টাকা দাবি করেন। আমিনুল ইসলামকে তদন্তের জন্য তিন হাজার টাকাও দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। জমি সংক্রান্ত কেস বড় বলে টাকা দাবি করেন এসআই আমিনুল ইসলাম। তিনি আরও জানান, এসআই আমিনুলকে আসামী নুর হোসেনের সঙ্গে হাসাহাসি করে কথা বলতে দেখেছেন। তার ভাষ্য আসামী নূর হোসেনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তার পক্ষ নিয়ে আছিয়া খাতুনকে হয়রানী করছে এসআই আমিনুল ইসলাম। আছিয়া খাতুন জানান, নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা করার পর একবার ওসি কাছে দেখা করেছিলেন। ওই সময়েও ওসি সমস্যার তেমন সমাধান দিতে পারেননি। ওসি আদালতে ওকিলের সাথে কথা বলার পরামর্শ দিয়ে চলে যেতে বলেছেন। জানা যায় সম্প্রতি আসামী নূর হোসেন সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমরের সঙ্গে উঠাবসার কারনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বর্তমানে বিরোধকৃত জমিতে দোকানঘর ভাংচুর করে ওই জায়গায় কবুতরের ঘর নির্মাণ করেছে। এছাড়াও আছিয়া খাতুনের কর্মজীবি তিন ছেলেকে মাদক দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। এ ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ওসির দারস্থ হয়েছিলেন আছিয়া। গত পাঁচ দিন সোনারগাঁ থানার ওসির সাথে দেখা করতে কনস্টেবলরা বাঁধা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম বলেন, ওই মহিলার অভিযোগ সত্য নয়। আদালতে তার দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করেছি। তাছাড়া তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্টদের সাথে দেখা করতে হয়েছে। সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এমন কেউ করে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-অঞ্চল) খোরশেদ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। সেবা পাওয়ার অধিকার সবার রয়েছে। ওই মহিলাকে থানায় যেতে বলেন আমি বলে দিচ্ছি। সুত্র: সময়ের আলো