মেহেদী হাসান, জয়পুরহাট প্রতিনিধি: অপরাধ ব্যাপক অনিয়ম ও সমন্বয়হীনতার কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে জয়পুরহাট সদর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন চালুর প্রকল্প সরেজমিনবার্তা | নিউজ টি ০ দিন ৯ ঘন্টা ২৮ সেকেন্ড আগে6 আপলোড হয়েছে। 2205 … ব্যাপক অনিয়ম ও সমন্বয়হীনতার কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে জয়পুরহাট সদর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন চালুর প্রকল্প জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ ২৩.০৯.২০ ব্যাপক অনিয়ম ও সমন্বয়হীনতার কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে জয়পুরহাট সদর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন চালুর প্রকল্প। অভিযোগ উঠেছে, নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে নিম্নমানের এ মেশিন যেসব বিদ্যালয় কিনেছে, তাদের অধিকাংশই এখন অকেজো হয়ে পড়েছে প্রতিটি মেশিন কেনা-বাবদ ১২ থেকে ১৬ হাজার টাকার অবৈধ ‘বাণিজ্য’ হয়েছে। অর্থাৎ প্রকল্পটি থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ৭ লক্ষ থেকে ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। অসাধু এ চক্রের নেতৃত্বে সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারূল ইসলাম মাসুদ ওরফে জাপান মাসুদ রয়েছে বলে জানা গেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের জন্য বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন ক্রয়ের নির্দেশনা দেয় সরকার। সে অনুযায়ী, গত বছরের ২৮ এপ্রিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে সব জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের (ডিপিইও) চিঠি দেয়া হয়। প্রথম ধাপে গত বছরের ২৬ জুন স্পেসিফিকেশন নির্ধারণ করে সারাদেশে নির্দেশনা পাঠানো হয়। ১৩ অক্টোবর আবারও নতুন করে স্পেসিফিকেশন দেয়া হয়। চিঠিতে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি- ৪) ফান্ড থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা নিশ্চিত করতে ডিভাইস (ডিজিটাল হাজিরা মেশিন) কিনতে বলা হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাজারদর অনুযায়ী স্পেসিফিকেশন অনুসরণ করে কেনার নির্দেশ উপেক্ষা করে সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু তারেক মোঃ রওনাক আখতারসহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারূল ইসলাম মাসুদ ওরফে জাপান মাসুদ অতিরিক্ত দামে ওই মেশিন কিনতে তৎপর হয়। এ চক্রই নিম্নমানের মেশিন কিনতে বাধ্য করে বিদ্যালয় প্রধানদের। সূত্রে জানা যায় রিয়েল টাইম মেশিন (মডেল ঞ-৫২) যার বাজার মূল্য ৮ হাজার টাকা অথচ প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৫শ টাকা থেকে ১৬ হাজার টাকা পযর্ন্ত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রধান শিক্ষক বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু তারেক মোঃ রওনাক আখতার প্রতিটা স্কুল বাবদ ২ হাজার টাকা করে ২ লক্ষ আর জাপান মাসুদ প্রায় ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সরেজমিনে স্কুল গুলো পরিদর্শন করে দেখা যায় ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের কার্যক্রম চালু না হতেই কোন মেশিনের ডিসপ্লে নষ্ট,কোনটা চালু হয়না এবং মেশিন গুলোতে কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়নি। দেওনাহার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আওলাদ হোসেনের কাছে ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরে তিনি বলেন আমরা হাজিরা মেশিন সম্পর্কে খুব ভালো বুঝিনা যার কারনে আমাদের কাছে দ্বিগুন মূল্য ধরা হয়েছে। জয়পুরহাট সদর উপজেলায় মোট ১০৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, প্রায় ১০৩ বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনা হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ মেশিনই অকেজো হয়ে পড়েছে। কয়েকটি মেশিন সচল থাকলেও তা ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। অভিযেগের বিষয়ে জানতে চাইলে চকগোপাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারূল ইসলাম মাসুদ ওরফে জাপান মাসুদ বলেন, এবিষয়ে আমি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোন মন্তব্য করতে পারবনা। এ প্রসঙ্গে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (এটিইও) রুহুল আমিনের কাছে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন দ্বিগুন দামে কেনার কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, এবিষয়ে কোন ধারনা নেই আমার। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু তারেক মোঃ রওনাক আখতার দাবি করেন এসব মেশিন ক্রয়-সংক্রান্ত বিষয়ে তার হস্তক্ষেপ ছিল না, সকল বিদ্যালয়ের প্রধানদেরকে দেখে শুনে মেশিন ক্রয় করতে নিদের্শনা দেয়া ছিল। মেশিন ক্রয়-সংক্রান্ত বাণিজ্যে আমি জড়িত এ বিষয়ে কেউ কোন প্রমান দিতে পারবেনা তবে কোথাও অনিয়মের অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ডিজিটাল হাজিরা মেশিন ক্রয়-সংক্রান্ত বিষয়ে কোথাও কোন অনিয়ম হয়েছে কিনা তার অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টা খতিয়ে দেখা হবে।